বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং জগতে অন্যতম জনপ্রিয় একটি কাজ হচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। এর মাধ্যমে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবেন এবং নিজের ক্লায়েন্টের হয়েও কাজ করবেন। এটি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় এবং ক্রমবর্ধমান একটি অনলাইন কর্মক্ষেত্র। আজ XeronHost এর পক্ষ থেকে আপনাদের সাথে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো আমি সারজান ফারাবী।
চলুন জেনে নেই সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে কি বোঝায়:
সোস্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোন পণ্য বা সেবার প্রচার করাকে সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কে সংক্ষেপে SMM বলা হয়। সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বর্তমান সময়ের অত্যান্ত জনপ্রিয় একটি প্রচার মাধ্যম। আপনি খুব সহজে আপনার কাস্টমারের কাছে আপনার বিজ্ঞাপনটি প্রচার করতে পারবেন এই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে।
বর্তমানে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। কিন্তু এসব বিজ্ঞাপন টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌছাতে পারে কি না sure হওয়া যায় না। মানুষ গান শোনার সময় কিংবা মুভি দেখার সময় এ্যাডভ্যার্টিইজ চলে আসে। তখন এই চ্যানেল বাদ দিয়ে অন্য চ্যানেলে চলে যায়। এবং বাড়িতে ছোট বড়, পুরুষ মহিলা সবাই বিজ্ঞাপনটি দেখে। কিন্তু আপনি যদি লেডিস পণ্য। যেমন কসমেটিকস এর বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার টার্গেট হবে শুধুমাত্র মেয়েদের কাছে পৌঁছানো।
আপনি যদি টিভি চ্যানেলে কিংবা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন তাহলে খরচ অনেক বেশি পড়বে। কিন্তু টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছাবে কি না কোন বোঝা যায় না। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মার্কেটিং বা বিজ্ঞাপন দিলে টার্গেট অডিয়েন্স সেট করা যায়। এবং সে বিজ্ঞাপন কত বছর বয়সের মানুষ দেখতে পারবে সেটাও সেট করা যায়। তাহলে অল্প খরচে টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে কোন পণ্য বা সেবা পৌঁছাতে পারবো। এবং সেই পণ্য বা সেবা পছন্দ হলে সাথে সাথে অর্ডার করতে পারবে অনলাইনের মাধ্যমে। এতে পণ্যটি বিক্রিও হল এবং প্রচার ও হল। এজন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংএর গুরুত্ব অনেক।
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব কতটুকু?
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বহির্বিশ্বে ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করেছে। যার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে, বর্তমানে আমাদের দেশেও চালু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামি দশ বছর এর মধ্যে আরো ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অনেক কোম্পানি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শুরু করে দিয়েছে এবং প্রচুর পরিমাণে লাভবানও হচ্ছে।
কিভাবে করবেন সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং?
বর্তমানে অনেকেই সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সময় নষ্ট করে থাকে। আপনার নিজস্ব কোন কোম্পানি না থাকলেও সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ এক্সপার্ট হলে, এই বিষয়ের উপর ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং করতে পারবেন। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ওয়েবসাইট সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ফেসবুক মার্কেটিং: সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে ফেসবুক অন্যতম। ফেসবুকের মাধ্যমে কোন পন্য বা সেবার প্রচার করে দেওয়াকেই ফেসবুক মার্কেটিং বলে। এক কথায় ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় তাকেই ফেসবুক মার্কেটিং বলে। যে কোন ধরণের পোস্ট ফেসবুকে টাকার মাধ্যমে দেয়া যায়, যেটা স্পন্সর হিসাবে ফেসবুক ইউজারের নিউজফীডে শো করে। এ ধরণের বিজ্ঞাপন সাধারণত আপনার ফেসবুক নিউজফিডে বিভিন্ন পন্যের স্পন্সরড পোষ্ট আসে। একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পোস্ট অথবা আপনি বিভিন্ন অডিও, ভিডিও, টেক্সট এর মাধ্যমে আপনার প্রচার চালাতে পারেন।
ইন্সটাগ্রাম: ইন্সটাগ্রাম হচ্ছে ফটো শেয়ারিং প্লাটফর্ম। এটিও একটি ফেসবুকের কোম্পানি। টোটাল ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির ২০% মানুষ ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করে থাকে। ফেসবুকে কোন পণ্য বা সার্ভিস বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময় সেটিং থেকে ইন্সটাগ্রাম সিলেক্ট করে দিলে অটোমেটিক বিজ্ঞাপনটি ইন্সটাগ্রামেও ভিউ হবে। আপনি ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং করলে ২০% মানুষ আপনার এই বিজ্ঞাপনটি সম্পর্কে জানতে পারবে। ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং এ কিভাবে সফল হবেন তা জানার জন্য ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং এর ৮ টি পাওয়ারফুল টিপস পড়ে নিতে পারেন।
ইউটিউব: ইউটিউবে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিডিও পাবলিশ হয়ে থাকে। যেগুলো দেখার জন্য মিলিয়ন ভিউয়ার্স ইউটিউব ভিজিট করে। সেই ভিডিও গুলো তৈরি করে থাকে একজন ইউটিউবার। আপনি যদি ভিডিও তৈরিতে অনেক পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি যে কোন প্রোডাক্টের হয়ে স্পনসরশীপ গ্রহণ করতে পারবেন। আপনার কাজ হবে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ওই প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রোমোশনাল ভিডিও তৈরি করা, যা দেখে কাস্টমাররা তাদের প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হবে। এর ফলে ওই প্রোডাক্টের মালিকানা প্রতিষ্ঠান আপনাকে সম্মানী প্রদান করবে।
টুইটার: যে পদ্ধতির মাধ্যমে টুইটার ব্যবহারকারীর কাছে আপনার বিজ্ঞাপন পৌঁছায় সে পদ্ধতিকে টুইটার মার্কেটিং বলে। বাংলাদেশে ফেসবুক যেমন জনপ্রিয় বহির বিশ্বে টুইটার তেমনই জনপ্রিয়। বর্তমানে ফেইসবুক স্কামিং বেশি হওয়ার কারণে বাহিরের দেশ গুলা ফেইসবুকে বেশি টাইম স্পেন করে না। আপনার টার্গেট যদি বাংলাদেশের মানুষ হয়ে থাকে তাহলে ফেসবুকের দিকে ঝুঁকে পরবেন। আর যদি ইন্টারন্যাশনাল টার্গেট হয় তাহলে টুইটার মার্কেটিং করবেন। পশ্চিমা বিশ্বে টুইটার মার্কেটিং এ বেশি সাফল্য লাভ করবেন।
তাহলে আর দেরী কেন? আজই শুরু করে দিন আপনার সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর প্রক্রিয়া। আর ক্যারিয়ার সংক্রান্ত যেকোন টিপস পেতে সব সময় XeronHost এর সাথে আপডেট থাকুন।